সংবিধানের পঞ্চম অনুচ্ছেদের সাথে সাংঘর্ষিক এমন দাবি তুলেই ইমরান খানের বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা ভোট বাতিল করে দিয়েছেন পাকিস্তানের পার্লামেন্টের ডেপুটি স্পিকার কাসিম শাহ সুরি। অন্যদিকে ইমরানের আদেশে দেশটির প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভিও বর্তমান সংসদ ভেঙে দিয়েছেন। ৯০ দিনের মধ্যে পাকিস্তানে হবে পার্লামেন্ট নির্বাচন। 

পাকিস্তানের চলমান এই রাজনৈতিক সংকট নিয়ে অবস্থান জানিয়েছে দেশটির সেনাবাহিনী। পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল বাবর ইফতিখার বলেছেন, আজ যা ঘটেছে তা নিয়ে সেনাবাহিনীর কিছুই করার নেই। খবর জিও নিউজ ও ডনের।

যদিও পাকিস্তানের সংবিধান ও আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন ভিন্ন কথা। আইনজীবী আব্দুল মইজ জাফেরি বলেছেন, “এটা বলে তারা মিথ্যাটাকে আরও বড় করেছে, সহজ বানিয়েছে। এমনকি তারা সংবিধানকেই ছিড়ে ফেলেছে। তার দাবি, স্পিকার কেবল বিমূর্তভাবেই সংবিধানকে ভুল কাজে লাগাননি। পিটিআই নেতারা চূড়ান্তভাবে সংবিধানের ভুল ব্যবহার, ভুল ব্যাখ্যা ও ভুল উপস্থাপন করেছে নিজেদের স্বার্থে। সবশেষ তিনি শেক্সপিয়ারকে উদ্ধৃত করে বলেছেন, শয়তান নিজের স্বার্থ চরিতার্থ করতেই ধর্ম গ্রন্থ আওড়ালো।”

 

অ্যাডভোকেট সালমান আকরাম রাজা জানিয়েছে, “বিরোধীদের সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হওয়া ছাড়া আর কোনও উপায় নেই। তিনি বলেন, ‘আমার দৃষ্টিকোণ থেকে সাংবিধানিক ঘটনায় স্পিকার পুরো অসাংবিধানিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।” মিরাজ মইজ বেগ নামের আরেক আইনজীবী টুইটারে বলেছেন, “দল হিসেবে আপনি যে কাউকে সমর্থন করতেই পারেন। তবে আজ যা হলো এটা সংবিধানের সার্বভৌমত্ব ও আইনের শাসনের জন্য অন্ধকারতম দিন। সংবিধানের মূল্যবোধ যখন  চূর্ণবিচূর্ণ হয়, তখন আমাদের সবকিছুই দুর্বল হয়ে পড়ে। কী দুঃখ ও কলঙ্কজন সমাপ্তি!”

আইনজীবি আসাদ রাহিমও টুইটে বলেছেন, “আরও একবার পার্লামেন্টের ভাগ্য সুপ্রিম কোর্টের নির্ধারণ করতে হবে।” পাকিস্তানের আইনজীবী ও মানবাধিকার কর্মী রিমা ওমেরও টুইটারে বলেছেন, “স্পিকারের আদেশ চরমভাবে অসাংবিধানিক। প্রেসিডেন্টকে সংসদ ভেঙে দেওয়ার পরামর্শ দেওয়ার কোনও অধিকারই ইমরান খানের নেই।”

কলামিস্ট শামা জুনেজোও টুইটে বলেছেন, “ফাওয়াদ সংবিধানের ভুল ব্যাখা দিয়েছেন। সাথে শামার দাবি, সংবিধানের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করার দায়ে স্পিকার ও ইমরান আইনে দণ্ডিত হবেন।” আরেক আইনজীবী হাসান কামাল ভুট্টো বলেছেন, “গণতন্ত্র ও পাকিস্তানের আইনের শাসনের জন্য এটা অন্ধকার দিন।”